Quantcast
Viewing all articles
Browse latest Browse all 109

ঘাড় নাড়া পুতুলের আদিরূপ কি যক্ষের মূর্তি?

আজকাল বার্ধক্য মানেই বঞ্চনা। সমাজ তাকে কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারলে বাঁচে। পেনশনের টাকায় আর ক’দিন? অবহেলা মাখা চোখে এই প্রশ্নই ধেয়ে আসে বার্ধক্যের দিকে। ব্যাঙ্কের সুদের হার, বাসের সিনিয়র সিটিজেনের বরাদ্দ দু’টি আসন আর গুটিকতক কিছু সুবিধা বাদে বার্ধক্যের সম্মানজনক অস্তিত্ব আজ সংকটে। কাকা, দাদু, মাসি– এই ডাকগুলোর মধ্যেও শ্লেষমিশ্রিত মনোভাব। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বৃদ্ধতন্ত্রকে যুবারা পথের কাঁটা হিসেবেই দেখে। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে আজ বার্ধক্য একঘরে। সে ‘বোঝা’ ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু চিরকাল এমনটা ছিল না। একটা জাতির ফেলে আসা অতীতের মূল্যবোধের সাক্ষ্য বহন করে চলে তার শিল্পকলা। বাংলার পুতুলে সেই সাক্ষ্যকে আমরা খুঁজে পাই। বার্ধক্যের নিজস্ব সৌন্দর্য, তার স্নেহশীল মরমি ভাব আবার জ্ঞানের প্রাজ্ঞতা নিয়েই গড়ে উঠেছে বাঙালির ঘাড়-নাড়া বুড়ো পুতুল। এই পুতুলে একটা জাতির ফেলে আসা অতীতের শ্রদ্ধাবোধ অঞ্জলি হয়ে উঠেছে।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
শিল্প: রঞ্জন পাল। দাইহাট, পূর্ব বর্ধমান

চোখের তাকানোয় বিজ্ঞতা। জীবনসংগ্রামে বহু লড়াই শেষে বিপুল অভিজ্ঞতা যে ভাবনার জন্ম দেয়, সেই ভাবনা দিয়েই মুখের অভিব্যক্তি গড়া। শান্ত অথচ ভাবুক। ডান হাতে হুঁকো। নির্মেদ শরীর উন্মুক্ত। শুধু বাঁ-কাঁধে লাল রঙা কাপড়। হাঁটুর ওপরে সাদা ধুতি। বহুকাল আগে এই বসনেই চণ্ডীমণ্ডপের আড্ডায় দেখা যেত বৃদ্ধদের। আর সেই বৃদ্ধের পুতুলই গড়েন পূর্ব বর্ধমানের পাতাইহাটের শিল্পী রঞ্জন পাল। তার তুলির টান যেন সরল স্বাভাবিক রীতিতে এগিয়ে গিয়েছে। তুলো দিয়ে পরিপাটি করে সাদা চুল ও দাড়ি শিল্পী বানিয়েছেন। পুতুলটির মুখ শরীরের বাকি অংশের সঙ্গে স্প্রিং দিয়ে যুক্ত করা। গায়ের রং হলুদ। আজও রথ ও চড়কের মেলায় গ্রামীণ ও মফস্সলের বাংলায় শিশুমনে আন্দোলিত করে এই পুতুল।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
শিল্পী: বিমল পাল, কাঁকিনাড়া

‘বার্ধক্য’ মানে নতজানু হয়ে বেচেঁ থাকা নয়। বার্ধক্যের মানে দাপটের সঙ্গে নিজের অস্তিত্বকে জানান দেওয়ার স্পর্ধা। বার্ধক্য মানে কৈফিয়ত দেওয়া নয়। কৈফিয়ত নেওয়া। এই ভাবনাই দেখা যায়, উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়ার মৃৎশিল্পী বিমল পালের তৈরি ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুলে। স্থূল হলেও সোজা হয়ে কৈফিয়ত চাওয়ার ভঙ্গিমায় বসে রয়েছে হাতে হুকো নিয়ে। চোখের দৃষ্টিতে কোনও ভয় নেই। অনাবৃত শরীরে রয়েছে পইতে। গায়ের রং ফর্সা। কপালে লাল টিকা। সাদা দাড়ি চুলে শরীরী ভাষায় নাটকীয় ভঙ্গিমা পুতুলটির প্রতি বিশেষ আকর্ষণ তৈরি করে। সেই একই চারিত্রিক দৃঢ়চেতা শরীরী ভাষা লক্ষ করা যায় নবদ্বীপের শ্রীবাসঅঙ্গন চড়ার নিমাই পালের তৈরি পুতুল।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
শিল্পী: আরতি পাল। রাজ্যধরপুর, শ্রীরামপুর

আগামী প্রজন্মের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের প্রতি অভিভাবকের চিন্তাব্যাকুল মনের দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করা যায় শ্রীরামপুরের রাজ্যধরপুরের শিল্পী আরতি পালের তৈরি পুতুলে। পইতে পরা। আসন করে বসা স্থূল বৃদ্ধের চোখে চিন্তার ভাব। মুখে নেই কোনও হাসি। কপালে লাল টিকা।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
শিল্পী: প্রভাস পাল। সাজিরহাট

মুখে বুদ্ধিদীপ্ত হাসি নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে প্রভাস পালের তৈরি ঘাড়-নাড়া বুড়ো পুতুল। বড়ো টানা চোখ যুগলে মন ভালো হয়ে যাওয়ার আশ্বাস। বার্ধক্যের রসময়তা নিজের অনুপম শিল্পশৈলীর মাধম্যে তুলে ধরেছেন উত্তর ২৪ পরগনার শিল্পী প্রভাস পাল। তার তৈরি ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুল একটু মাথা বেঁকিয়ে রয়েছে। আর এখানেই এক অনন্য নাটকীয়তা লক্ষ করা যায়।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
শিল্পী: সঞ্জয় দাস। শ্রীরামপুর

কপালে, কাঁধে তিলক। গলা, হাতের কবজিতে রুদ্রাক্ষের মালা। অনাবৃত স্থূল শরীরের একাংশে রয়েছে উত্তরীয়। হাঁটুর ওপরে ধুতি। মাথা উচুঁ করে সে চেয়ে আছে অসীমের দিকে। মনের ভেতরে চলা ভাবনা, চোখের তাকানোয় বেরিয়ে আসছে। শ্রীরামপুরের মাঠপাড়ার শিল্পী সঞ্জয় দাসের এই পুতুলে আত্মমগ্ন, কিন্তু গম্ভীর ভাব স্পষ্ট। এই পুতুলটির কপালে তিলকের মাঝে লাল টিকা লক্ষণীয়।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
শিল্পী: উত্তম পাল। শ্রীরামপুর।

এই একই পাড়ার আর এক শিল্পী উত্তম পাল জমিদারি ঢঙে ঘাড়-নাড়া বুড়ো পুতুল তৈরি করেন। পাশবালিশে বাঁ-হাতের কনুই দিয়ে হেলান দিয়ে রয়েছে পরিপাটি করে ধুতি পাঞ্জাবি পরা এক বৃদ্ধ। ডান হাতে তার হুঁকো। এখানে ধুতি কিন্তু পায়ের পাতা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে। অভিব্যক্তিতে কর্তৃত্ব মনোভাব স্পষ্ট। এই বৃদ্ধ যেন নির্দেশ করছে। অর্থাৎ, জমিদারি ভাব ফুটে উঠেছে। চুঁচুড়া মৃৎশিল্পী গোকুল পালও রঙিন ধুতি পাঞ্জাবি পরা পুতুল তৈরি করে থাকেন। কিন্তু এখানে কোলবালিশ নেই। মুখে শান্ত মরমি হাসি নিয়ে আসন করে ডান হাতে হুকো নিয়ে বসে রয়েছে সে। পুতুলটির শরীরী ভাষায় আয়েশ করে হুঁকোয় টান দেওয়াটা গৌণ, আদতে সে স্নেহ করতে চাইছে। কপালে বৈষ্ণবীয় তিলক।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
গোকুল পাল। চুঁচুড়া

নবদ্বীপের গোবিন্দ বাড়িতলার শিল্পী গোপাল পাল দীর্ঘ বহু দশক ধরে মাটির পুতুল বানিয়ে চলেছেন। তার তৈরি ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুল লাল রঙের পাঞ্জাবি পরে রয়েছেন। মাথায় লাল টিকা। শিল্পী তুলির টানে পুতুলটির পায়ের পাতা পর্যন্ত আসা ধুতির কুচির প্রতিটি ভাঁজ স্পষ্ট করে দেখিয়েছেন। গোপাল পালের তৈরি ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুলটির বসার ভঙ্গিমা দেখে মনে হয়েছে সে একটু উঁচু জায়গায় বসে রয়েছে।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
শিল্পী: গোপাল পাল, নবদ্বীপ

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর মজিলপুরের বর্ষীয়ান মৃৎশিল্পী রবিন দাসের তৈরি ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুল নির্মাণের শৈলী ভিন্ন। পুতুলটি শরীরের ভেতরে অংশটি একেবারে ফাঁপা। তার মধ্যে একটা ফুটো করা রয়েছে। সেই ফুটোর মধ্যে পুতুলটির গলা তার দিয়ে জোড়া লাগানো রয়েছে। ফলে এই পুতুলটির মাথা স্প্রিং দিয়ে নড়ে না। আঙুলের হালকা ছোঁয়ায় পুতুলটির মাথা নড়ে ওঠে। এই পুতুলের কপালে রয়েছে লাল টিকা।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
শিল্পী: রবিন দাস। দক্ষিণ ২৪ পরগনা। মজিলপুর

ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুলের গায়ের রঙে উজ্জ্বল বর্ণ বা ফর্সার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তাই তো গায়ের রঙে হালকা হলুদ, হালকা বাদামি বা ক্রিম কালারের ব্যবহার দেখা যায়। যদিও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও রয়েছে, যেমন বাঁকুড়া জেলার সোনামুখীর রথের মেলায় গোলাপি রঙের পুতুল পাওয়া যায়। গলা, বাহু, কবজিতে রুদ্রাক্ষের মালা। কপালে টিকা। একই রঙ লক্ষ করা যায়, হুগলি চন্দননগরের মৃৎশিল্পী সুকুমার পালের তৈরি পুতুলে। পূর্ব-বর্ধমানের কাটোয়া শহরের চড়কের মেলায় কেশহীন কিন্তু সুশ্রুত বিদ্যমান পুতুলের গায়ের রং শ্যামবর্ণ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে পুতুলে শ্যামবর্ণ ও খেটে খাওয়া শ্রেণির অভিব্যাক্তি দেখা যায়। অন্যদিকে, কপালে লাল টিকা ও বৈষ্ণবীয় তিলক এবং হাতের কবজি ও গলায় রুদ্রাক্ষ ও তুলসীর মালা থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, এই পুতুলে সাধকের ভাব রয়েছে। জীবন ও আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা মিলেমিশে গিয়েছে। কয়েকটি পুতুলে পইতে থাকায় উচ্চবর্ণের ভাবনা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
চড়কের মেলা। কাটোয়া

কিন্তু ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুল কীভাবে এল? এর আদি রূপ কী ছিল? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর এখনও স্পষ্ট নয়। তবে একটা ধারণা করা যেতে পারে। চন্দ্রকেতুগড় প্রত্নখনন করে পাওয়া যক্ষের মূর্তি আজকের ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুলের আদি রূপ হতে পারে। স্থূল শরীর, বুকে এক হাত। অন্য হাতে দণ্ড নিয়ে হাঁটুর ওপর ভর দিয়ে রাখা। হয়তো এই দণ্ড কালক্রমে হুঁকোয় পরিণত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রত্ন সংগ্রহশালায় এই মূর্তি রাখা রয়েছে। আজকের ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুলের তুলো দিয়ে মোড়ানো চুল ও দাঁড়ি যদি ফেলে দেওয়া যায়, তবে অবিকল যক্ষের মতোই লাগবে।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
Yaksha Yakshi | Sculpture | Encyclopedia of Art
যক্ষের মূর্তি। চন্দ্রকেতুগড়

আরও একটি যক্ষ মূর্তিতে দেখা যায়, যেখানে সে মাথায় মুকুট পরে রয়েছে। কানে দুল। গলা ও হাতের কবজিতে মালার মতো অলংকার। সে যেন একটু উঁচু জায়গায় বসে রয়েছে। দু’টি হাত হাঁটুর ওপর রাখা। এস. সি. মুখোপাধ্যায়ের লেখা ‘আরলি টেরাকোটা অফ বেঙ্গল’ বইয়ের থেকে জানা যায় যে, শুঙ্গ শাসনের দ্বিমাত্রিক দেহতত্ত্বের উজ্জ্বলতা ও উষ্ণতার বিজয় উল্লাসের প্রতীক হয়ে উঠেছে। বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ্যবাদের প্রভাবও এই যক্ষ মূর্তিতে পড়েছে। ফলে আজকের ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুলের শারীরিক ভঙ্গিতে যে সাধক ভাবনা দেখতে পাই সেটা ওই ধারার প্রভাব হতে পারে। চন্দ্রকেতুগড়ের আরও একটি যক্ষ মূর্তিতে দেখা যায় যে, হাতের মধ্যে একটি ঘটের মতো জিনিস নিয়ে বসে রয়েছে। বসার ধরন আজকের ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুলের মতো। প্রাচীন বাংলায় সূর্যদেবের পুজোর প্রচলন ছিল। গোঘাট থেকে খনন করা দশম শতাব্দীর এক বড় সূর্য মূর্তি সামনে একাধিক যোদ্ধার সমাবেশ। তার মধ্যে এক যোদ্ধা আসন করে বসে রয়েছে। হাতের তলোয়ারটা মাটিতে ভর দেওয়া রয়েছে। যোদ্ধার বসার ভঙ্গির মধ্যে আজকের ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুলের বসার সাদৃশ্য রয়েছে।

উত্তর দিনাজপুরের পাথরপুঞ্জা থেকে দশম শতাব্দীর পাথরের তৈরি অগ্নিমূর্তি খনন করে পাওয়া যায়। এই মূর্তির মধ্যে এক হাতে ঘট আর অন্য হাতে জপের মালা রয়েছে। মাথায় মুকুট। এই মূর্তির ছোঁয়া কিন্তু আজকের ঘাড় নাড়া পুতুলের ভাবমূর্তিতে লক্ষ করা যায়। ঘট ও জপের মালার জায়গায় এসেছে হুকো। আবার উনিশ শতকের বাঁকুড়ার চক্ষুদান পটে এক বৃদ্ধ বৈষ্ণবের ছবি ফুটে উঠেছে, যেখানে আমরা দেখতে পাই তার শরীরের বিভিন্ন অংশে তিলক দেওয়া রয়েছে। গায়ে সাদা রঙের উত্তরীয়। হাতে জপের মালা। মাথার পেছনে টিকি। একই শতকে আঁকা অন্য একটি চক্ষুদান পটে দেখা যায় যে পৈতে পরা এক ব্রাহ্মণ হাতে তুলসীপাতা নিয়ে বসে রয়েছে। গলায় তুলসীর মালা। এই দু’টি পটের ছোঁয়া আজকের ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুলের মধ্যে লক্ষ করা যায়। গবেষক স্বপন ঠাকুর দেখিয়েছেন যে, গ্রাম বাংলায় বুড়ো-বুড়ি পুজোর প্রচলন রয়েছে। মূলত ভয় নিবারণ করে এই দেবতা। হুগলি বাঁশবেড়িয়ার মৃৎশিল্পী লক্ষ্মী নারায়ণ চৌধুরীর তৈরি ঘাড়-নাড়া-বুড়ো-বুড়ি পুতুল তৈরি করে থাকেন। ফলে লোকজ দেবতা কালক্রমে শিশুদের মন ভোলানোর পুতুল হয়ে উঠেছে।

…………………………………………….

আরও পড়ুন শুভঙ্কর দাস-এর লেখা: দীপ জ্বেলে যাওয়ার অঙ্গীকারের প্রতীক দীপাবলির পুতুল ‘দীপলক্ষ্মী’

…………………………………………….

বাংলায় ছাঁচের মূর্তি তৈরি উৎস ঘাটতে গিয়ে প্রামাণ্য প্রতীক হচ্ছে চন্দ্রকেতুগড় থেকে খনন করে প্রাপ্ত একটি মাতৃকা প্রতিমার দুই খোল ছাঁচ। এটি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রত্ন সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত। অতিসূক্ষ্ম কারুকার্য যা আজও বিস্ময় জাগাবে। বাংলার পুতুল নির্মাণে ছাঁচের ব্যবহারের বহমান পরম্পরা লক্ষ করা যায়। ঘাড়-নাড়া বুড়ো পুতুল হচ্ছে ছাঁচের তৈরি। আগে পোড়ামাটির হলেও বর্তমানে তা কাঁচা মাটির হয়। তার ওপর রং করা হয়।

Image may be NSFW.
Clik here to view.
গ্রাম বাংলার চণ্ডীমণ্ডপের আড্ডা। রয়েছে গোপাল ভাঁড়ও

কিন্তু আজকের ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুল আরও বেশি আধুনিক হয়েছে। তাই সে এখন নকশা করা কোট, প্যান্ট পরছে। মাথায় টুপি। আসন করে বসার সময় আর তার নেই। সে এখন পকেটে হাত দিয়ে সিগারেট খাচ্ছে। এই শৈলীর পুতুলের দেখা পাওয়া যায় উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়া, হাবরা আর দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের বোরিয়ায়।

শিল্প বিবর্তনের বহুধারা পেরিয়ে আজও গ্রাম, মফস্সলের প্রান্তিক শ্রেণিতে থাকা শিশুদের মনে আনন্দের দোলা দিয়ে যায় ঘাড়-নাড়া-বুড়ো পুতুল। সে এখনও দাদু সুলভ ভালবাসা ছড়িয়ে চলেছে এই সমাজের বুকে। সে ব্যাটারি চালিত রিমোট কন্ট্রোলে চলে না। কিন্তু আমাদের মনকে বরাবর তার দিকে নিয়ে যেতে সে পেরেছে। আর এখানেই সার্থক হয়ে উঠেছে বাংলার আদি অকৃত্রিম শিল্প বিবর্তনের পরম্পরা।

………………………………………

ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল

………………………………………

The post ঘাড় নাড়া পুতুলের আদিরূপ কি যক্ষের মূর্তি? appeared first on Robbar | Sangbad Pratidin.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 109

Trending Articles